Saleha Mothercare

সালেহা মাদার কেয়ার-এ আপনাকে স্বাগতম। আমাদের হাসপাতাল মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করার জন্য নিবেদিত। আমরা মানসম্পন্ন চিকিৎসা ও সহায়তা প্রদান করি, যাতে প্রতিটি মায়ের এবং শিশুর সুস্থ জীবন নিশ্চিত করা যায়।

Visiting Hours

Gallery Posts

sr d 1

প্রসবকালীন সেবা (Labour and Delivery Care) হলো সেই চিকিৎসা সেবা যা একজন গর্ভবতী মায়ের প্রসবের সময় (যতটুকু সময় তিনি জন্মদানের জন্য হাসপাতালে থাকেন) প্রদান করা হয়। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়, কারণ মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখা ও নিরাপদভাবে প্রসব সম্পন্ন করাটা সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ।

Service Image
Service Image
Service Image

প্রসবকালীন সেবার প্রধান উদ্দেশ্য হলো মা ও শিশুর জীবন রক্ষা করা এবং মায়ের প্রসবের অভিজ্ঞতাকে যতটা সম্ভব সুরক্ষিত এবং আরামদায়ক করা।

১. প্রসবের প্রথম পর্যায় (লেবার)

এটি সেই সময় যখন মায়ের প্রসবের প্রস্তুতি শুরু হয়। এ সময়ে মায়ের জরুরি পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করা হয়। এতে অন্তর্ভুক্ত:

  • প্রথম চিহ্ন ও সংকোচন: মায়ের প্রসবের লক্ষণ যেমন নিয়মিত সংকোচন বা পেইন শুরু হওয়া।
  • বাড়তি পর্যবেক্ষণ: মা ও শিশুর মনিটরিং করা হয়, যেমন মায়ের জরুরি পরীক্ষা, গর্ভাশয়ের অবস্থান, এবং শিশুর হার্টবিট পর্যবেক্ষণ।
  • পেইন ম্যানেজমেন্ট: মা যদি প্রচণ্ড যন্ত্রণায় ভোগেন, তবে বিভিন্ন পেইন রিলিফ পদ্ধতি ব্যবহৃত হতে পারে, যেমন:
    • এপিডুরাল অ্যানেস্থেশিয়া: কোমরের নিচে ইনজেকশন দিয়ে পেইন কমানো।
    • গ্যাস ও অক্সিজেন থেরাপি: কিছু হাসপাতাল গ্যাস প্রদান করে যন্ত্রণা কমানোর জন্য।
    • ন্যাচারাল পেইন রিলিফ: যেমন প্রশ্বাস প্রশিক্ষণ ও শিথিলতা।

২. প্রসবের দ্বিতীয় পর্যায় (ডেলিভারি)

এটি সেই সময় যখন মা শিশুকে পৃথিবীতে নিয়ে আসেন। এই পর্যায়ে, স্বাস্থ্যকর্মীরা নিশ্চিত করেন যে প্রসবের প্রক্রিয়া সঠিকভাবে এবং নিরাপদে হচ্ছে।

  • নরমাল ডেলিভারি: যদি সবকিছু সঠিকভাবে হয় এবং মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ থাকে, তবে নরমাল ডেলিভারি পরিচালিত হয়।
  • সিজারিয়ান সেকশন: যদি কোনও জটিলতা থাকে (যেমন, শিশুর অবস্থান সঠিক না হওয়া, অতিরিক্ত রক্তপাত, বা গর্ভাশয়ে কোনও সমস্যা), তাহলে সিজারিয়ান সেকশন (C-section) করা হতে পারে। এটি একটি অস্ত্রোপচার পদ্ধতি যেখানে শিশুকে মায়ের পেটের মাধ্যমে বের করা হয়।
  • পুশিং স্টেজ: মা যখন চাপ দেন এবং শিশুটির মাথা বের হতে শুরু করে, তখন এই সময়ে ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীরা মা’কে সহায়তা করেন।

৩. প্রসবের তৃতীয় পর্যায় (প্লেসেন্টাল ডেলিভারি)

শিশু জন্মের পরে, গর্ভাশয়ে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকে, তা হলো প্লেসেন্টার বা গর্ভাশয়ের অংশ বের করা। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে গর্ভাশয়ে থাকা যেকোনো অবশিষ্ট অংশ পরিষ্কার করা হয়, যাতে মা পরবর্তীতে ইনফেকশনের সম্মুখীন না হন।

  • প্লেসেন্টা ডেলিভারি: এটি সাধারণত শিশুর জন্মের পর ১৫-৩০ মিনিটের মধ্যে ঘটে।

৪. মায়ের পরবর্তী সেবা (Post-Delivery Care)

শিশু জন্ম দেওয়ার পর, মায়ের শারীরিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য কিছু সময় দরকার। একে পরবর্তী সেবা বলা হয়:

  • রক্তচাপ এবং হার্টবিট চেক: প্রসবের পর মা’র শরীরের সঠিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়, যাতে কোনও জটিলতা (যেমন অতিরিক্ত রক্তপাত) না ঘটে।
  • সন্তান জন্মের পর স্তন্যদান পরামর্শ: নবজাতককে প্রথম স্তন্যদান করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
  • এন্টিবায়োটিক এবং অন্যান্য ঔষধ: যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে মা’কে রক্তশূন্যতা, ইনফেকশন প্রতিরোধক ঔষধ বা অন্যান্য সাপোর্টিভ মেডিসিন দেওয়া হতে পারে।

৫. মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা

প্রসবকালীন সময়ে মায়ের মানসিক অবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সময়টি তার শরীরিক এবং মানসিক চাপের সবচেয়ে বেশি থাকে। কিছু হাসপাতালে মানসিক পরামর্শদাতা বা থেরাপিস্টের সহায়তা নেওয়া হয়, যাতে মা যেন পরবর্তী সময়ে সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।

৬. নবজাতক স্বাস্থ্যপরীক্ষা

শিশু জন্মের পর তাকে কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়:

  • শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের পরীক্ষা: যেন শিশুর শ্বাসনালী বা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা না হয়।
  • ভ্যাকসিনেশন ও পরীক্ষা: যেমন জন্মগত কিছু রোগের জন্য স্ক্রিনিং, ভিটামিন K ইনজেকশন দেওয়া এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা।
  • নবজাতককে ইনকিউবেটরে রাখা: যদি শিশু একটু দুর্বল বা সুরক্ষা প্রয়োজন হয়, তাহলে তাকে ইনকিউবেটরে রাখা হতে পারে।

৭. পরামর্শ ও সাপোর্ট

  • প্রথম স্তন্যদান: মা ও শিশুর মধ্যে প্রথম স্তন্যদানকে সহজ এবং স্বাভাবিক করার জন্য নার্স বা পরামর্শদাতা সাহায্য করতে পারেন।
  • স্তন্যদান সম্পর্কিত পরামর্শ: মায়ের স্তনযন্ত্রের সমস্যা বা শিশুর স্তন্যপানের সমস্যা থাকলে বিশেষজ্ঞদের সহায়তা প্রদান করা হয়।

উপসংহার: প্রসবকালীন সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মা ও শিশুর জীবনের নিরাপত্তা এবং সুস্থতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। উপযুক্ত মনিটরিং, চিকিৎসা সেবা এবং সঠিক সময়ের সহায়তার মাধ্যমে, মা ও শিশুর জন্য একটি নিরাপদ এবং আরামদায়ক প্রসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।

এমন একটি সেবা ব্যবস্থায়, বিশেষত সালেহা মাদার কেয়ার হাসপাতাল