গাইনোকোলজি বা স্ত্রীরোগবিদ্যা হল নারী স্বাস্থ্য সম্পর্কিত চিকিৎসা শাস্ত্র, যা নারীদের প্রজনন অঙ্গ ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে। গাইনোকোলজির অধীনে নারী স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করা হয়। নিচে গাইনোকোলজির অধীনে সেবাগুলি উল্লেখ করা হলো:
১. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রজনন অঙ্গের যে কোনো সমস্যা প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যায় এবং দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয়।
২. মেনস্ট্রুয়াল সমস্যা
যেসব নারীদের মাসিক অনিয়মিত বা ব্যথাযুক্ত, বেশি রক্তক্ষরণ, বা অন্য কোনো মেনস্ট্রুয়াল সমস্যা রয়েছে, তাদের সঠিক পরামর্শ ও চিকিৎসা দেওয়া হয়।
৩. জন্ম নিয়ন্ত্রণ ও পরিবার পরিকল্পনা
নারীদের পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে পরামর্শ এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির (বিভিন্ন কন্ট্রাসেপটিভ) নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে নারী ও পুরুষ উভয়েই তাদের পরিবার পরিকল্পনা সঠিকভাবে করতে পারেন।
৪. প্রজনন ক্ষমতা ও বন্ধ্যাত্ব
যেসব নারীদের গর্ভধারণে সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভধারণের পূর্ব প্রস্তুতি, ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্ট এবং বন্ধ্যাত্ব সমস্যার চিকিৎসা করা হয়।
৫. প্রেগনেন্সি কেয়ার
গর্ভধারণের সময় নারী স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রসবপূর্ব সেবা গাইনোকোলজির অধীনে পড়ে। এটি মায়ের ও শিশুর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৬. প্রি ও পোস্টমেনোপজ কেয়ার
মেনোপজের আগে ও পরে নারীদের শারীরিক এবং মানসিক নানা পরিবর্তন হয়। গাইনোকোলজিস্টরা এসব পরিবর্তন সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করেন এবং হরমোনাল পরিবর্তনজনিত সমস্যার চিকিৎসা করেন।
৭. গাইনোকোলজিক্যাল সার্জারি
কিছু জটিল অবস্থায় সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে, যেমন ফাইব্রয়েডস, সিস্ট, এন্ডোমেট্রিওসিস বা জরায়ু ওভারির সমস্যার জন্য। গাইনোকোলজিস্টরা এসব সমস্যার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন।
৮. যৌন স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ
নারীদের যৌন স্বাস্থ্য, যৌন সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা, এবং অন্যান্য যৌন সম্পর্কিত সমস্যা নিরসনে গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৯. জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার নির্ণয়
গাইনোকোলজিস্টরা নারীদের জরায়ু, সার্ভিক্যাল ও স্তন ক্যান্সারের স্ক্রিনিং এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
১০. হরমোনজনিত সমস্যা
নারীদের মধ্যে হরমোনজনিত নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS), হরমোনাল ইমব্যালেন্স ইত্যাদি। এ সমস্যাগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গাইনোকোলজির আওতায় পড়ে।
সালেহা মাদার কেয়ার হাসপাতালের গাইনোকোলজি বিভাগে এই সকল সেবার মাধ্যমে নারীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়।
Comments are closed